১৯১১ সালে সম্রাট পঞ্চম জর্জ ভারতে এসেছিলেন বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করতে। তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে settled fact যা ছিল তা unsettled হয়ে গেল।
অর্থাৎ প্রশাসনিক-রাজনৈতিকভাবে ভাঙা বাংলা আবার জোড়া লাগল; কিন্তু ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরে গেল, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যহীন ছিল না। যা হোক, এক আলাপচারিতায় সম্রাট ভারতের জাতীয়তাবাদী নেতা গোখলেকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইংরেজরা ভারতের দৃশ্যমান অনেক উন্নতি করিয়ে দিলেও ভারতীয়রা স্বাধীনতার জন্য এত উচ্চকণ্ঠ কেন?
গোখেলের সোজাসাপটা উত্তর ছিল, ভারতীয়রা স্বাধীন হয়ে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। অর্থাৎ গোখেলের বিবেচনায় স্বাধীনতা আত্মমর্যাদার সূচক ও দ্যোতক ছিল; আসলেই তাই। আমাদের স্বাধীনতা আত্মমর্যাদার তো ছিলই; উপরন্তু ছিল অপশাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তি। কাজেই আমাদের স্বাধীনতা ব্যাপক অর্থবোধক ছিল।
১৯৪৬-এর এপ্রিল মাসে মওলানা আবুল কালাম আজাদ লাহোরের উর্দু চাত্তান পত্রিকার সাংবাদিক শোরিশ কাশ্মীরিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তিনি বলেছিলেন, মুহম্মদ আলী জিন্নাহ বাঙালির ইতিহাস জানেন না; বাঙালিরা বেশিদিন বিদেশি শাসন পছন্দ করে না। কাজেই তারা পাকিস্তানের সঙ্গে একসময় থাকবে না। মওলানা আজাদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হয়েছিল ১৯৭১-এ; বাঙালি স্বাধীন হয়েছিল।